| ১৬ এপ্রিল ২০২০ | ৬:৫৭ পূর্বাহ্ণ | পড়া হয়েছে 431 বার
না জেনেই সংস্পর্শে এসেছিলেন কোনো করোনা আক্রান্ত রোগীর। তাই সাবধান হওয়ার সুযোগ পাননি ডা. মো. মঈন উদ্দিন। আক্রান্ত হন তিনি। সবাইকে শোকে ভাসিয়ে ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত ডা. মঈন চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তার এ মৃত্যু হূদয় বিদীর্ণ করার মতো। চিকিত্সক সমাজ শোকাহত। সিলেটবাসী শোকাহত। পুরো দেশ শোকাহত। চিকিত্সা দিতে গিয়ে নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। গত ৫ এপ্রিল কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার পর থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিত্সাধীন ছিলেন। গত বুধবার ঢাকা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন জনপ্রিয় এ চিকিত্সক (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। গতকাল রাতেই সিলেটের সুনামগঞ্জের ছাতকে তার গ্রামের বাড়িতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাকে দাফন করা হয়।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সিলেটে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ টিমের সদস্য ছিলেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মঈন উদ্দিন।
তার দুই সন্তান। আর স্ত্রী পার্ক ভিউ মেডিক্যাল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. রিফাত জাহান। ডা. মঈন সিলেটে করোনা মোকাবিলায় প্রথম সারির চিকিত্সক ছিলেন। তার মৃত্যুতে ডাক্তারসহ সর্বমহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
গত ৫ এপ্রিল আইইডিসিআর থেকে তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তিনি অবশ্য ৩০ মার্চ থেকেই তার বাসায় কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। এর পর নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। পরে ডা. মঈনের অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ৭ এপ্রিল সিলেট নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনা আইসোলেশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। ৮ এপ্রিল তাকে ঢাকায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আইসিইউতে থাকা অবস্থায় বুধবার ভোর সাড়ে ৪টায় চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ডা. মঈন ছিলেন সিলেটের এক জন মেধাবী চিকিত্সক। তিনি মেডিসিনের পাশাপাশি কার্ডিওলজিরও চিকিত্সক ছিলেন। এফসিপিএস-এর পাশাপাশি তিনি কার্ডিওলজিতে এমডি করেন। রোগীসহ সর্বমহলে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নাদামপুর গ্রামে। সেখানে তিনি প্রতি শুক্রবার রোগীদের ফ্রি চিকিত্সা দিতেন।