| ২২ নভেম্বর ২০১৯ | ৮:৪৩ অপরাহ্ণ | পড়া হয়েছে 469 বার
জাপান প্রবাসী সংগীত শিল্পী খন্দকার ফজলুল হক রতন কে সংবর্ধনার মাধ্যমে বিরল সন্মান জানিয়েছে জাপান প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটি। তিনি সকলের কাছে ‘রতনদা বা কারো কারোর কাছে গুরু রতন’নামেই সমাধিক পরিচিত।
জাপানে বাংলা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ খন্দকার ফজলুল হক রতন কে এই সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে একক সংগীত পরিবেশন করেন
১৭ নভেম্বর ‘১৯ রোববার টোকিওর কিতা সিটি অজি হোকু তোপিয়া স্কাই হলে সান্ধ্যকালীন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সর্ব স্তরের প্রবাসীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহনে আয়োজনটি প্রাণবন্ত হয়ে উঠে।
টোকিওর আশে পাশের প্রিফেকচার ( সাইতামা, চিবা, গুনমা, কানাগাওয়া,তোচিগি, শিযুওকা ) থেকে প্রবাসীরা জড় হন আয়োজন স্থলে। অংশ নেন রতনের গানের জাপানী ভক্তরাও। অনুষ্ঠান শুরুর পূর্ব থেকেই আয়োজন স্থল কানায় কানায় ভরে যায়। এক পর্যায়ে আসন সংকুলান না হয়ে অনেকেই দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
তনুশ্রী গোলদার বিশ্বাস এর পরিচালনায় সংবর্ধনার প্রারম্ভে খন্দকার ফজলুল হক রতন এর সংগীত জীবনের উপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। ভিডিও চিত্রে বাংলাদেশ থেকে তাঁর উদ্দেশ্যে পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তা স্থান পায়।
খন্দকার ফজলুল হক রতন সংবর্ধনা মঞ্চে উঠার সময় সকলে দাঁড়িয়ে গুনী এই শিল্পীর প্রতি সন্মান জানান। এসময় তাঁর পাশে ছিলেন তাঁর সহধর্মিণী চিযুরু এনদো। চিযুরু এনদো নিজেও উত্তরণ বাংলাদেশ কালচারাল গ্রুপের নিয়মিত সদস্য।
এরপর বিভিন্ন সংগঠন থেকে রতন দম্পতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনেকে আবার ব্যক্তিগত ভাবে ফুলেল অভিনন্দন জানান। বাদ যান নি জাপানীজ ভক্তরাও ।
ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পর বাংলাদেশ কমিউনিটি , জাপান এর পক্ষ থেকে সালেহ মোঃ আরিফ এর নেতৃত্বে সংবর্ধনা ক্রেস্ট তুলে দেন প্রবাসী নেতৃবৃন্দ।
এরপর বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গুনী শিল্পী কে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁর সুস্বাস্থ ও দীর্ঘকাল শিল্পী জীবন কামনা করে বক্তব্য রাখেন।
সংবর্ধনার জবাবে প্রবাসীদের ভালোবাসায় সিক্ত রতন বলেন, আমি কখনো ভাবিনি যে আপনাদের এতো ভালোবাসার ঋণে আমি আবদ্ধ্ব হয়ে গেছি। আপনাদের এই ভালবাসার ঋণ আমাকে আরও বেশী সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমেই শোধ করতে চাই। আমি আমরণ গান গেয়ে যেতে চাই। সংগীতই আমার ধ্যান , ধারনা। আশা করি আগামীতেও আপনাদের ভালবাসা অব্যাহত থাকবে।
এরপর শুরু হয় গুরু রতনের একক সংগীত পরিবেশনা। সংগীতের বিভিন্ন অঙ্গন থেকে একে একে অনেক গুলো জনপ্রিয় গান তিনি পরিবেশন করেন। এসময় যন্ত্রে সহযোগিতায় ছিলেন যেরোম গোমেজ, মান্না চৌধুরী , ইমতিয়াজ আহমেদ কোরেইশি, কাজী ইকবাল পিনু, বাচ্চু দত্ত, এনদো চিযুরু, শুভজিত রায় অভি এবং সায়মন হোসেন প্রমুখ।
কমিউনিটি ব্যাক্তিত্ব সালেহ মোঃ আরিফ এর নেতৃত্বে একদল কর্মী অনুষ্ঠান আয়োজনের নেপথ্যে কাজ করে সংবর্ধনা আয়োজনটিকে সার্বজনীন করে তুলেন। অনেকেই বিভিন্নভাবে সহযোগিতার হাত বাড়ান।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার সন্তান খন্দকার ফজলুল হক রতন উত্তরণ বাংলাদেশ কালচারাল গ্রুপ , জাপান এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, প্রাক্তন লিডার এবং প্রানপুরুষ। ১৯৮৮ সালে উত্তরণ প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পূর্ব থেকেই তিনি দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশী সময় যাবত তিনি বাংলা সংগীত চর্চা এবং জাপানে বাংলা সংস্কৃতি তুলে ধরার নিমিত্তে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে থাকাকালীন ছাত্রাবস্থায় তিনি গানের ভুবনে পা রাখেন।