| ০৪ অক্টোবর ২০২০ | ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ | পড়া হয়েছে 452 বার
{গত পর্বের কন্টিনিউনিটি দিচ্ছি। আমার পিতৃতুল্য যেই ব্যাক্তির কথা বলছি, উনার নাম আওয়ানো মিকিও। উনার ফিউনারেল নিয়েই এই পর্বে লিখার কথা। লিখতে গিয়ে মনে হলো, উনার সাথে কিভাবে পরিচয় হলো, তা জানানো দরকার}
আওয়ানো ফ্যামিলির সাথে প্রথম দেখা ২৫ বছর আগে। ১৯৮৮ সালের ২২শে অক্টোবর। জাপানে আসার মাত্র ১৯ দিন পর। পরিচয়ের পর্ব টা ও বেশ নাটকীয়। আমাদের জাপানীজ স্কুলে একটা অনুষ্ঠান হচ্ছিল। প্রথম দেখা উনাদের একমাত্র ছেলে শিমনের সাথে।
অনুষ্ঠান বলতে তেমন কিছু না। বিদেশী ছাত্রদের জন্য টোকেনের মাধ্যমে অতি সস্তায় দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য জিনিস পত্র বিক্রি হচ্ছিল। বাংলাদেশ থেকে আসা আমরা তিন কিশোর টোকেনের নিয়ম কানুন বুঝতে না বুঝতেই সব সাবাড় হয়ে গেল। স্কুল আঙিনার এক পাশে দাড়িয়ে হতাশায় আক্রান্ত আমরা তিন জন গল্প করছিলাম। দেখি নয়-দশ বছরের একটা ছেলে। আমাদের দিকে হ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। কাধে একটা ক্যামেরা ঝুলানো। ক্যানন অটোবয়। আমার কাধে ও একই ক্যামেরা।
খাচ বাংলায় গিয়ে বললাম, দ্যাখ তোর ক্যামেরা আর আমার ক্যামেরা এক। দিলাম তোরে একটা চিমটি। ছেলেটা খট খট করে হেসে উঠলো।
আমরা যাই বলি ছেলেটা কেবলই হাসে। কিছুক্ষণ পর ওর বাবা-মা এসে হাজির হল। কারো কথা কেউ বুঝিনা। আমরা কিছু বলি, উনারা হাসেন। উনারা বলেন, আমরা হাসি। ডায়েরী থেকে কাগজ বের করে আমাদের ডরমিটরীর ঠিকানা আর ফোন নম্বর দিলাম। উনারা ও দিলেন। বাবা ইংরেজীতে ঠিকানা লিখছেন- মা ও ছেলে গর্বের সাথে দেখছেন। ঠিকানা লেখা শেষ, আবার ও হাসাহাসি। কথা শেষ, বল্লাম একটা ছবি নিতে চাই। ছবি নিতেই আমার রিল শেষ হয়ে গেল। ডিজিটাল ক্যামেরা তখনো আবিষ্কার হয়নি। ছেলেটাও ছবি নিল। তার ও রিল শেষ হয়ে গেল। আমি আবার ও গিয়ে চিমটি দিলাম। ছেলেটা হো হো করে হেসে উঠলো ।